Tuesday, September 24, 2013

জিহাদের জন্য সাধারণ নির্দেশাবলী - শাইখ আইমান আল–জাওয়াহীরী


প্রথম পর্ব

1. এই পর্যায়ে আমাদের কাজের দু’টি দিক আছে; এটি লুকানো গোপন কোন বিষয় নয়: প্রথমটি সামরিক এবং দ্বিতীয়টি প্রচারণা (দাওয়াত ও তাবলীগ)
2. সামরিক কাজের লক্ষ্যবস্তু প্রথমতঃ (আন্তর্জাতিক) অবিশ্বাসীদের মাথা আমেরিকা এবং তার জোটসঙ্গী ইস্রায়েল, এবং দ্বিতীয়তঃ আমেরিকার স্থানীয় জোটসঙ্গীরা যারা আমাদের দেশসমূহ শাসন করছে।
) আমেরিকাকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর উদ্দেশ্য হল- তাকে নি:শেষ করে ফেলা ও তার রক্ত ক্ষরণ করা যাতে তার মৃত্যু হয়; যাতে এটি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাগ্য বরণকরে এবং নিজস্ব সামরিক, মানবিক, ও আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির ওজন বৃদ্ধির ফলে ধ্বংস হয়ে যায়। ফলাফল স্বরূপ আমাদের ভূমির উপর এর আগ্রাসন দুর্বল হবে এবং তার জোট সঙ্গীদের একের পর এক পতন আরম্ভ হবে। যা আরব বিশ্বের বিপ্লবের সময় আমেরিকার ক্ষিয়মান প্রভাবের বিষয়টি প্রকাশ্যভাবে প্রমাণিত করে। আফগানিস্তান এবং ইরাকের মুজাহিদিনদের হাতে নির্মম আঘাত এবং সেপ্টেম্বর 2001 এর পরে তার জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত হুমকির সম্মুখীন হবার পর, আমেরিকা মুসলিম দেশসমূহে তার জনগণের উপর চাপ কমানোর জন্য কিছু পন্থা তৈরীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।  তথাপি, তার এই নীতির পরেও পরিস্থিতি পূর্ণ উত্তাপমুখর।
আল্লাহর অনুগ্রহে, আসন্ন পর্যায় (আগামী দিনগুলি) বিশ্ব পরিস্থিতিতে আমেরিকান প্রভাবের অধিক অধঃপতনের সাক্ষী হবে এবং তার নিজস্ব শেলে (খোলকে) (আমেরিকার) আরও পশ্চাদপসরণ হবে; যা তার জোটসঙ্গী সরকারগুলিকেও দুর্বল করে দেবে।
) আমেরিকার জোটসঙ্গীদের লক্ষ্যবস্তু বানানো যাতে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে; এর কৌশল স্থানভেদে বিভিন্ন হতে পারে।মৌলিক নীতিমালা হলো - তাদের সঙ্গে কোনো মুখোমুখি সঙ্ঘাতে জড়িয়ে না পড়া; সে সব দেশ ছাড়া যেখানে তাদের সঙ্গে মখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়াটা অনিবার্য। উদাহরণস্বরূপ- আফগানিস্তানে, তাদের (স্থানীয় সরকার) বিরুদ্ধে যুদ্ধ হল আমেরিকানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের একটি অংশ। পাকিস্তানে, (স্থানীয় সরকার) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হল- আফগানিস্তানের আগ্রাসন মুক্তির জন্য সহায়ক একটি দিক; তারপর, এটার লক্ষ্য- পাকিস্তানী মুজাহীদদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরি করা যা পরবর্তীতে পাকিস্তানে একটি ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য চালু প্যাড হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ইরাকে, (স্থানীয় সরকার) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের লক্ষ্য হল- আমেরিকার উত্তরসূরী সাফাভিদ (শিয়া)’দের থেকে সুন্নি অঞ্চল মুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করা। আলজেরিয়ায়, যেখানে আমেরিকান উপস্থিতি তুচ্ছ এবং অস্পষ্ট, যেখানে ক্ষমাতাসীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের লক্ষ্য হল- এটাকে দূর্বল করে ফেলা এবং ইসলামিক মাগরীব-এ জিহাদি কার্যক্রমের প্রভাব বিস্তার করার লক্ষ্যে কাজ করা; বিশেষতঃ পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় অঞ্চল এবং দক্ষিণ সাহারার দেশসমূহে।
সম্প্রতি, আমেরিকা ও তার জোটসঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ এই অঞ্চলের ক্ষেত্রে এটাকে স্পষ্ট করে তুলেছে।
আরব উপদ্বীপের মধ্যে, তাদের (স্থানীয় সরকার) বিরুদ্ধে সংগ্রামের কারণ হচ্ছে - আমেরিকার সঙ্গে তাদের (স্থানীয় সরকার) জোট তৈরী করা। সোমালিয়ায়, তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের কারণ হল- তারা (স্থানীয় সরকার) ক্রুসেডারদের বল্লমের ডগা হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সিরিয়ায়, তাদের (স্থানীয় সরকার) বিরুদ্ধে সংগ্রাম এর কারণ হল- যার ভিত্তি স্থাপিত এর উপর যে,- সিরিয়ার শাসকবর্গ ইসলামী সত্ত্বার (ইসলামী বিধি-বিধান) নিছক উপস্থিতির অনুমতি দেয় না। একজন জিহাদী ছাড়াও (জিহাদ প্রসঙ্গ বাদ দিলেও);-
তাদের ইসলামকে শিকড় সহ উপড়ে ফেলার প্রচেষ্টার রক্তাক্ত ইতিহাস অতি সুপরিচিত। জেরুজালেমের পরিপার্শ্বে, সর্বাগ্রে এবং প্রাথমিক যুদ্ধ ইহুদিদের বিরুদ্ধে, সাথে সাথে ​​স্থানীয় শাসক যারা Oslo ব্যবস্থার অধিনে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব ধৈর্য ধারণ করা আবশ্যক।
3. প্রচার-প্রসারের (দাওয়াত ও তাবলীগ) কাজে যতদুর উদ্বিগ্নতা তৈরী হয়, ক্রুসেডারদের আক্রমণের হুমকি থাকা সত্ত্বেও এটা উম্মাহ এর মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার লক্ষ্যে কাজ করে, এটা তাওহীদের প্রকৃত অর্থকে ফুটিয়ে তোলে এই অর্থে যে,- শাসন এবং সার্বভৌমত্বের অধিকারী একমাত্র আল্লাহ, ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ এবং মুসলিম ভূমি সমূহের ঐক্যবদ্ধতা (unity)’র বিষয়ে অধিক গুরুত্বসহকারে চাপ প্রয়োগ করে থাকে। আল্লাহর অনুগ্রহে, এটি আল্লাহর নাবী (সঃ) এর পদ্ধতি অনুযায়ী একটি খিলাফাত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ভূমিকা স্বরূপ কাজ করবে
প্রচার-প্রসারণের (দাওয়াত ও তাবলীগ) এই ক্ষেত্রে মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গি দুটি ভাগে বিভক্ত হওয়া প্রয়োজন-
প্রথমতঃ অগ্রণী মুজাহিদ দলের প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি, আল্লাহর অনুগ্রহে যতক্ষণ পর্যন্ত না খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ক্রুসেডার এবং তাদের জোটসঙ্গিদের পরাজিত করার দায়িত্ব ধারাবাহিক ভাবে একের পর এক বহন করে যাবে।
দ্বিতীয়ত: জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা, তাদের উদ্দীপ্ত করা, এবং তাদেরকে পরিচালিত করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া; যাতে তারা তাদের শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং ইসলাম ও ইসলামের জন্য যারা কাজ করে যাচ্ছে তাদের পক্ষে যোগদান করে।

দ্বিতীয় পর্ব
প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী

পূর্ব প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করে, আমরা আল-সিয়াসাহ্ আল-শারিয়াহ্ (ইসলামী শারিয়ার উপর ভিত্তি করে রাজনীতি)’র আলোকে নিম্নলিখিত নির্দেশাবলী ঘোষণা করতে পারি; যার উদ্দেশ্য হল- স্বীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করা এবং ক্ষতি এড়িয়ে যাওয়া।
1. সাধারণ জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা, যাতে তারা সচল হয়ে উঠে; অনূরূপভাবে এই সচেতনতার পর্যায়কে এমন একটি উঁচু স্তর পর্যন্ত পৌঁছানো যাতে অগ্রণী মুজাহিদদের মাঝে- সংগঠিত, ঐক্যবদ্ধ, আদর্শিক সচেতনতা সহ প্রবল জিহাদী শক্তির সৃষ্টি হয়; যারা দৃঢ়ভাবে ইসলামী আদর্শে বিশ্বাসী, এর নীতি-মালার প্রতি অনুগত, বিশ্বাসীদের (মুসলিম) সাথে বিনয়-নম্রতা এবং অবিশ্বসীদের (কাফির ও মুশরিক) সাথে কঠোরতাপূর্ণ আচরণ করে। একই সময়ে, জনসাধারণকে নিশ্চিত করতে মুজাহিদিনদের নিকট থেকে আসা ঘোষণা বা নির্দেশনা প্রচারে সঙ্গে সঙ্গেই পাণ্ডিত্যপূর্ণ কঠিন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া; যাতে করে আমাদের (মুজাহিদিনদের) পাঠানো সংবাদ ও আদর্শ সংরক্ষিত থাকে এবং মুসলিমদের মধ্যে জিহাদের ডাক ছড়িয়ে পড়ে।
2. সামরিক ক্ষেত্রে কোন বিষয়ে আলেকপাত প্রতিনিয়ত কঠিনভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত; আন্তর্জাতিক অবিশ্বাসীদের প্রধান (আমেরিকা)’দেরকে দূর্বল করে দিতে; যতক্ষণ না সামরিক এবং অর্থনৈতিকভাবে রক্ত ক্ষরণের মাধ্যমে এরা নিজেরাই মৃত্যু মুখে পতিত হয়; এর মানব সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায় এবং তাকে তার নিজস্ব শেলে প্রত্যাহার করে নেয় পশ্চদপসরণ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় পৌঁছার পর।(আল্লাহর অনুগহে তা খুব তাড়াতাড়ি সংঘটিত হবে)
সমস্ত মুজাহিদ ভাইদের প্রধানতম কর্তব্য হচ্ছে:- পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে পশ্চিমা ইহুদী ক্রুসেডার ও তাদের জোটবদ্ধ সঙ্গীদের স্বার্থে কঠিন আঘাত হানা। এই কাজের জন্য তারা তাদের ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করবে।
একইভাবে, এই মুজাহিদ ভাইয়েরা আবশ্যিকভাবে মুসলিম বন্দিদের মুক্ত করতে সম্ভাব্য সব ধরণের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে। প্রয়োজনে বন্দিদেরকে রাখা হয়েছে এমন কারাগারগুলিকে অবরোধ করতে হবে; অথবা যে দেশসমুহ মুসলিম দেশগুলির উপর আগ্রাসন চালাচ্ছে সেসব দেশের নাগরিকদের পণবন্দি করতে হবে, যাতে বন্দি মুক্তির বিনিময়ে আমরা আমাদের বন্দি মুজাহিদ ভাইদেরকে মুক্ত করে আনতে পারি।
বলে রাখা আবশ্যক, এটা পরিষ্কার থাকা উচিত যে, অবিশ্বাসীদের মাথা (আমেরিকা)’র ব্যপারে প্রকাশিত নীতি-মালা এবং মুসলিম জনসাধারণ ও জুলুমের শিকার এমন জাতি গোষ্ঠি; যারা মুখে অথবা অস্ত্রের সাহায্যে জালিমের জুলুমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তাদের উভয়ের ক্ষেত্রে এক নয়। তাই, ককেসাস এর মুসলিম ভাইদের অধিকার আছে আগ্রাসী রাশিয়া এবং এর জোটসঙ্গীদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার। কাশ্মীরে আমাদের মুসলিম ভাইদের অধিকার আছে অপরাধী হিন্দদের বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনা করার। সমানভাবে পূর্ব তুর্কিস্তানের আমাদের ভাইদের এটি একটি অধিকার যে, আগ্রাসী চিনের বিরুদ্ধে তারা জিহাদ পরিচালনা করবে। একইভাবে, এটি একটি অধিকার- ফিলিপাইন, মায়ানমার (বার্মা) এবং মুসলমানদের প্রত্যেক ভূখন্ড যেখানে আমাদের মুসলিম ভাইয়েরা নির্যাতিত সেখানে তারা অত্যাচারীদের ​বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনা করবে।
3. বাধ্য হওয়া ছাড়া, স্থানীয় সরকারের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া পরিহার করা। উদাহরণস্বরূপ : যখন স্থানীয় সরকার আগ্রাসী আমেরিকান বাহিনীর একটি অংশ হযে পড়ে; যেমন- আফগানিস্থান, অথবা যেখানে স্থানীয় প্রশাসন আমেরিকার পক্ষে মুজাহিদীনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করে, যেমন-সোমালিয়া এবং আরব উপদ্বীপ; অথবা এরা মুজাহিদীনদের সামান্যতম উপস্থিতিকেও সহ্য করে না, যেমন- ইসলামিক মাগরীব, সিরিয়া এবং ইরাক (এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যাবে)। তবে, তাদের (স্থানীয় সরকার) বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়া এড়িয়ে চলা আবশ্যক যখনই সম্ভব। যদি আমদেরকে যুদ্ধ করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে আমাদেরকে এটা পরিষ্কার করতে হবে যে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম হল- মুসলমানদের উপর আক্রমণকরী ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধের একটি অংশমাত্র।
উপরন্তূ, যেখানেই আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির সম্ভাবনা দেখতে পাই সেখানেই এই সুযোগ কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে; প্রচারের জন্য(দাওয়াত ও তাবলীগ), আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশের জন্য, বিশ্বাসীদের (মুসলিম) উত্সাহ প্রদানের জন্য, মুজাহিদ সংগ্রহের জন্য, তহবিল (অর্থ) সংগ্রহ করা এবং সাধারণভাবে সমর্থন বৃদ্ধির জন্য, আমাদের সংগ্রামকে দীর্ঘ মেয়াদী স্থায়ী করার জন্য। আর জিহাদের জন্য প্রয়োজন নিরাপদ ঘাঁটি, জনসাধারণের সংগতিপূর্ণ সমর্থন এবং দক্ষতা।
হ্যাঁ, কোন ভাবেই এই নীতি স্থানীয় প্রশাসন-আক্রমণকারী ক্রুসেডারদের জোট সঙ্গীদের জন্য দেওয়া নীতির বিপরীত নয়; তাদের প্রতি এটা একটা পরিষ্কার বার্তা যে, আমরা কোন সহজ শিকার (শিকারী বস্ত) নই; এবং প্রত্যেকটি কর্মেরই উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেখা হবে, যদিও এটি একটি সময় পরে আসে। পরিস্থিতির উপযুক্ততার আলোকে এই নিয়ম প্রত্যেক শাখার জন্য বাস্তবায়ন করা উচিত।
4. রাফিদী, ইসমাঈলী, কাদিয়ানী, ভ্রান্ত ‍সূফী ইত্যাদি ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়া বাতিল পথের অনুসারীদের (উপদল গুলি) সাথে যুদ্ধ এড়িয়ে চলা; ‍যদি তারা আহলে সন্নাহ ওয়াল জামায়াত এর সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে; এমনকি প্রতিক্রিয়া কেবল মাত্র তাদের মধ্য থেকে যে সরাসরি যুদ্ধে জড়িত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার উপর সীমিত থাকতে হবে। একই সময়ে, অবশ্যই আমাদেরকে এটা পরিষ্কার করে দিতে হবে যে, আমরা কেবল আমাদের সুরক্ষা করছি। তাদের (উপদল গুলি) মধ্য থেকে যারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনা তাদেরকে লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়; আরো উচিত নয়- তাদের পরিবারকে তাদের বাড়িতে, তাদের ইবাদতের স্থান-তাদের ধর্মীয় উত্সব ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদিকে লক্ষ্যবস্তু বানানো।
যাইহোক, এটা (উপদল গুলির সাথে এই ব্যবহার) আমারদের বন্ধ করা উচিত নয় ক্রমাগতভাবে তাদের মিথ্যা প্রচারণা এবং তাদের ধর্মবিশ্বাস ও আচরণের পথভ্রষ্টতার কারণে।
মুজাহিদিনদের নিয়ন্ত্রণে আসা এলাকা গুলির ক্ষেত্রে- এই ধর্মীয় উপদলগলির সাথে ইসলামের সঠিক দাওয়াত দেওয়ার পর জ্ঞান ও বিজ্ঞতার মাধ্যমে (দলিল প্রমাণাদী ও যুক্তির মাধ্যমে) তাদের সাথে মোকাবিলা করতে হবে; সন্দেহ-সংশয় খণ্ডন, ভালো কাজের আদেশ-মন্দ কজের নিষেধ একটি উত্তম পন্থা যা কোন বড় ধরণের ক্ষতির মুখোমুখি করে না; যেমনটি ক্ষতি করে থাকে- এই এলাকা থেকে মুজাহিদিনদের বহিস্কার, তাদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের বিদ্রোহ অথবা অস্থিরতা সৃষ্টি; যা, শত্রু বাহিনী সেই এলাকাটি দখল করার জন্য ব্যবহার করতে পারে।
5. মুসলিম ভূ-খন্ডে বসবাসরত খৃস্টান, শিখ এবং হিন্দু ইত্যাদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংঘর্ষ বা বিরোধ এড়িয়ে চলুন, যদি তারা অপরাধ করে তবে একটি সামঞ্জস্যশীল প্রতিক্রিয়া শুধু মাত্র অপরাধীর উপর প্রয়োগ করাই যথেষ্ট।
এই প্রতিক্রিয়াটি একটি বিবৃতি সহকারে হওয়া উচিতে যে, আমরা তাদের সাথে একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে চাই না ততক্ষণ পর্যন্ত, যতক্ষণ আমরা যুদ্ধে জড়িয়ে আছি অবিশ্বাসীদের মাথা আমেরিকার সাথে; এবং আল্লাহর ইচ্ছায়, অদূর ভবিষ্যতে একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের সাথে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বসবাস করতে আগ্রহী।
6. সাধারণত, তাদের সাথে যুদ্ধ এড়িয়ে চলা বা তাদেরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত না করা- যারা আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেনি বা কোন ধরণের বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করেনি; এবং প্রাথমিকভাবে আক্রমণকারী ক্রুসেডার ও তাদের স্থানীয় জোটসঙ্গীদের ব্যাপারে দৃষ্টি অব্যাহত রাখতে হবে।
7. বেসামরিক নারী ও শিশুদের সাথে যুদ্ধ করা বা তাদেরকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকতে হবে, ‍যদিও এরা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত সৈনিকদের পরিবার ও পরিবারের সদস্য হয়; যতটা বেশি সম্ভব হয় এদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হতে বিরত থাকতে হবে।
8. বিস্ফোরণ, হত্যা, অপরহণ বা সম্পদ ধ্বংস করার মাধ্যমে মুসলমানদের যে কোন প্রকারের ক্ষতি করা হতে বিরত থাকতে হবে।
9. মাসজিদ, বাজার এবং সাধারণ জনতার ভিড়ে (জনসভায়)’র মধ্যে যেখানে শত্রু মুসলমানদের সাথে অথবা যারা আমাদের সাথে যুদ্ধ করছে না তাদের সাথে মিশে থাকে সে সব জায়গায় শত্রুকে টার্গেট তথা লক্ষ্যবস্তু বানানো হতে বিরত থাকতে হবে।
10. ইসলামিক পণ্ডিত (উলামায়ে কিরাম) এবং তাদের সম্মান রক্ষা করা, তাঁরা নাবী (তাঁর উপর শান্তি বর্ষিত হউক) এর উত্তরসূরী এবং মুসলিম উম্মাহর নেতা। যারা সত্যকে সত্য হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে এবং এর জন্য নিজেদেরকে উত্সর্গ করেছে তাদের ক্ষেত্রে সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এই বাধ্যবাধকতা আরো বেশি গভীরতার সাথে হওয়া উচিত। মন্দ পণ্ডিতদের (বিরোধী উলামায়ে কিরামগণ) সঙ্গে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে তাদের দ্বারা উত্থাপিত এবং প্রচারিত সন্দেহ-সংশয় নিরসন ও তাদের বিশ্বাসঘাতকতার স্বাক্ষ্য প্রমাণ করার জন্য। তাদের সাথে যুদ্ধ করা বা তাদেরকে হত্যা করা যাবেনা যতক্ষন না তারা মুসলিম এবং মুজাহিদদের বিরুদ্ধে সামরিক আইন লংঘন করে।
11. অন্যান্য ইসলামী গ্রুপ সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি :
) অন্যান্য ইসলামী দলগুলির সঙ্গে যে সব বিষয়ে আমরা একমত সেসব বিষয়ে আমরা একে অপরের সহযোগিতা করব; যে সব বিষয়ে আমরা একমত নই সে সব বিষয়ে আমরা উপদেশ এবং সংশোধনের পরামর্শ দেব।
) আমাদের মৌলিক সংঘাত ইসলামের শত্রুদের সাথে; যারা ইসলামের সাথে শত্রুতা রাখে। অতএব, অন্যান্য ইসলামী দলগুলির সাথে আমাদের পার্থক্য যেন ইসলামের শত্রুদের সাথে সংঘাত থেকে আমাদেরকে বিভ্রান্ত না করে- সামরিকভাবে, প্রচার-প্রপাগান্ডয়, আদর্শিকভাবে অথবা রাজনৈতিকভাবে।
. ইসলামের প্রতি আনুগত্য দাবী করার পরেও যদি কোন একটি ইসলামী দল বা উপদল অবিশ্বাসী শত্রুদের সাথে মিলিত হয়ে কখনও আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িত হয় তাহলে- এর আগ্রাসন রুখতে খুব বেশী প্রতিক্রিয়া দেখানো যাবে না, এতটুকু ছাড়া যতটুকু যথেষ্ট হবে এর আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য।
12. অত্যাচারীর বিরুদ্ধে নিপীড়িত জনতার বিপ্লব সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি :
সমর্থন-অংশগ্রহণ-গাইডেন্স (দিকনির্দেশনা)
) সমর্থন : জালিমের নিপীড়নের বিরুদ্ধে নিপীড়িত মজলুম জনতাকে সাহায্য করা যেহেতু ইসলামী শারিয়াহ্ এর একটি বাধ্যবাধকতা; তাই, মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সকলকে সমর্থন করা।
) অংশগ্রহণ : জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমকে সাহায্য করা যেহেতু ভালো কাজের আদেশ এবং মন্দ কাজের নিষেধ এর আওতায় পড়ে এবং তা আমাদের উপর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে; (তাই ভালো কাজের আদেশ মন্দ কাজের নিষেধে অংশগ্রহণ করা)
) নির্দেশিকা : ব্যক্তির কাজের উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর র্নিদেশিত পন্থা অনুযায়ী তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করা, ইসলামী শারিয়াহ (ইসলামী আইন ও শাসন ব্যবস্থা) কে সর্ব্বোচ্চ স্হান দেওয়া এবং একটি ইসলামী শাসন ব্যবস্থা ও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সংগ্রাম করা।
13. নির্যাতিত মুসলিমদেরকে সমর্থন করে এমন প্রত্যেককে উত্সাহিত ও সমর্থন করা; এবং যে তার কথা, মতামত ও কাজের মাধ্যমে (বিরোধিতা) সীমা লংঘন করে তাদের সাথে মোকাবিলা করা; নির্যাতিত মসলিমদেরকে সমর্থনকারী এধরণের মানুষদের জন্য ক্ষতিকারক কোন ‍নির্দেশনা অথবা কাজের মাধ্যমে অথবা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে এমন যে কোন কাজ ও পরামর্শ হতে বিরত থাকা; যতক্ষণ তারা তাদের সমর্থনের প্রতি অটুট থাকে এবং মুসলিমদের সাথে কোন খারাপ ব্যবাহর না করে।
14. মুসলমানদের অধিকার রক্ষা করা এবং তাদের সম্মানের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ করা, তারা যেখানে (যে কোন ভূ-খন্ডে)’ই থাকুক না কেন।
15. নির্যাতনের শিকার এমন প্রত্যেককে সাহায্য করা এবং সমর্থন দেওয়া; মুসলিম হউক অথবা অমুলিম হউক। তাদেরকে (মজলুমকে)সাহায্য করে এমন প্রত্যককে সমর্থন এবং উত্সাহিত করা, হয় সে মুসলিম হউক অথবা অ-মুসলিম হউক।
16. মুজাহিদগণ অবশ্যই সর্ব্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে তাদের বিরুদ্ধে ছড়ানো প্রতিটি মিথ্যা অপবাদ খন্ডন করতে এবং সেই মিথ্যা অপবাদ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রকৃত সত্যকে পবিস্কার করে তুলে ধরতে। আর এটা যদি সত্য হয়ে যায় যে, তাদের দ্বারা বিশেষ কোন ভূল হয়ে পড়েছে; তাহলে অবশ্যই তারা এর জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করবে, যে ব্যক্তি ভূল বশতঃ অন্যায় করেছে সেই ব্যক্তির ভূল থেকে প্রকাশ্যভাবে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখবে এবং ইসলামী শরিয়া আইনের অনুসারে নিজেদের সর্ব্বোচ্চ সামর্থ অনুসারে এই অন্যায়ের ফলে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদেরকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে।
17. ক্বায়িদাতুল জিহাদ (আল-ক্বায়েদা) সংগঠনের অধীনে কাজ করে এমন প্রত্যেক সংগঠন এর নেতা (আমির) এবং আমাদের সমর্থন করে এমন প্রত্যেক সুধী ও সমর্থক বৃন্দের প্রতি আমাদের আহ্বান- তারা যেন তাদের অনুসারীদের মাধ্যে এই নির্দেশিকা ছড়িয়ে দেয়, চাই সে দায়িত্বশীল কোন ব্যক্তি হউক অথবা সাধারণ ব্যক্তি হউক। কেননা এই নির্দেশিকার মধ্যে লুকানো কোন গোপন বিষয় নেই বরং এটি একটি সাধারণ নীতি নির্দেশিকা পত্র।
এই নির্দেশিকা প্রকাশের একমাত্র লক্ষ্য উদ্দেশ্য হল- ইসলামী শারিয়াহ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বার্থ রক্ষা করা এবং ইসলামী জিহাদি কাজের এই পর্যায়ে কর্মরতদের ইসলামী ব্যাখ্যামূলক রায় (ইজতিহাদ) দ্বারা যা ইসলামী আইন (শারিয়াহ) এর বিরোধিতা করেনা বরং এর (শারিয়াহ) নীতিমালাকে অধিক দৃঢ় করে, এমন ক্ষেত্রে ক্ষয়-ক্ষতি এড়ানো।
আমরা শুধুমাত্র আল্লাহরই সন্তূষ্টি কামনা করি, এবং তিনিই একমাত্র সত্ত্বা যিনি সঠিক পথে পরিচালিত করেন। আর শান্তি এবং করূণা বর্ষিত হউক আমাদের নেতা মুহাম্মাদ, তাঁর পরিবার এবং তাঁর সাথীদের প্রতি। আমাদের শেষ প্রার্থনা, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগত সমূহের প্রভূ।
একমাত্র আল্লাহর সন্তূষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যেই লিখিত-
আপনাদের ভাই-
আইমান আল-জাওয়াহিরী 1434 হিজরী


(বন্ধনীর মধ্যে অবস্থিত কথা গুলি অনুবাদকের; তথ্যসূত্রঃ- www.jihodology.net monthly archive September -14 এখানে মূল প্রবন্ধটি ইংরেজী ও আরবীতে পাওয়া যাবে)